বাংরেজি

বাংলা ভাষাটা অনেক মধুর। এত ভাব, এত মাধুর্য, এত অভিব্যক্তি খুব কম ভাষাতেই আছে। এই ভাষাতে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য গালাগালির আশ্রয় নিতে হয় না।
ভাষার জন্য জীবন দেয়া আমার ভাইদের আত্নার শান্তি কামনা করছি। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলা একামাত্র ভাষা যে ভাষার জন্য আমরা জীবন দিয়েছি। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বর্তমানে নিজের ভাষা বিকৃতি করা জাতির মধ্যে অন্যতম অবস্থানে বাঙ্গালি জাতির অবস্থান। একটু আধুনিকতার ছলে প্রতি লাইনে দুই একটা ইংরেজি শব্দ ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। শুনে শুধু বিচ্ছিরি লাগে তাই নয় কষ্টও লাগে, মনে হয় বেচারা বাংলা বা ইংরেজি কোনটাই পুরো বলতে পারে না।
কখনোবা কেউ অজুহাত দাড় করায় বাংরেজি বলার জন্য। ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যেস সহ নানা অজুহাত, সব কটারই ভিত্তি অতি দূর্বল। বাংলা মাধ্যমের ছাত্র ছিলাম, বাংলায় কথা বলি, এখন ইংরেজিতে পড়ালেখা করি, কখনো সমস্যা মনে হয় নি। একাধিক বিদেশি শিক্ষকের অধিনে ছিলাম জন্মসূত্রে যারা আমেরিকান ইংরেজ। তাদের ভাষা বুঝতেও সমস্যা হল না। বাংরেজি বলার জন্য কোন অজুহাত আমি দেখি না। রবীন্দ্রনাথ বা মধুসূদন দত্তের ইংরেজি জ্ঞান এযুগের প্রায় সব আধুনিক বাঙ্গালির চেয়ে বেশি ছিল বলেই মনে হয়, তারা বইয়ে বাংরেজি লিখে যান নি।
যারা বাংরেজি বলে কিছু শব্দ আছে যেগুলো অনেকের মুখ দিয়ে নিয়মিত বের হয়, একটিতো মোটেও মুখ দিয়ে বের হওয়ার জিনিস নয়, অথচ একটু মেজাজ গরম হলেই বেরুচ্ছে।
এ নিয়ে সারাদিন কথা বলা যাবে, বেশি বলার দরকার নেই কবি আব্দুল হাকিম অনেক আগেই বলে গেছেন, “যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী / সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।”
ইংরেজি শেখায় দোষ নেই বরং শেখাটা প্রয়োজনীয়। মুদ্রাদোষটা হল বাংলা আর ইংরেজি মেশানো, লক্ষ লক্ষ মানুষ মিলে একটা মিশ্র ভাষা তৈরি করা।
সোহান সরকার
২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।